পরিস্থিতি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিপদজনক: খালেদা

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন আরও বিপদজনক। মানুষ এক ভয়াল নৈঃশব্দের মধ্যে আতঙ্কে দিন যাপন করছে।

“চারিদিকে অরাজকতার জয়জয়কার। কর্তৃত্ববাদী শাসন এতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, মানুষের মুখে টু শব্দ শুনলেই সেই মানুষের টুটি টিপে ধরার জন্য ধেয়ে আসে রাষ্ট্রযন্ত্র।”

‘সুস্থ পরিবেশে গণতন্ত্র চর্চা এখন কেবল কবরেই সম্ভব’ বলেও মন্তব্য করেন খালেদা।  দুদিন আগে সন্ত্রাসীর কোপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক নিহতের পর সোমবার রাজধানীর কলাবাগানে নিজ বাসায় খুন হন ইউএসএআইডির কর্মকর্তা সমকামী অধিকার কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়।  এছাড়া একইদিন কাশিমপুরে কারাগারে প্রধান ফটকের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় এক কারারক্ষীকে।   এসব ঘটনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই ‘নিরাপত্তার দায়িত্ব নাগরিকদের নেওয়ার’ পরামর্শ দেন পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এসব হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।

তিনি বলেন, “দেশে হত্যা, হানাহানি, রক্তপাত, অপহরণ, গুম, মুক্তিপণ আদায়, বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড প্রচণ্ড আধিপত্য বিস্তার করেছে।

“মানুষের নিরাপত্তা, মানুষের অধিকার, ভোটাধিকার, নির্বাচন, গণতন্ত্র , শান্তি, স্বস্তি এখন লাশবাহী গাড়িতে। বর্তমান ভোটারবিহীন এই সরকারের সহিংস রক্তপাত ঘটানো ছাড়া তাদের টিকে থাকার অন্য কোনো পথ নেই। দেশ পরিচালনায় যেহেতু জনগণের সমর্থন নেই, সেহেতু খুন-জখম টিকিয়ে রাখাকেই তারা পরিত্রাণের পথ মনে করছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতি ইংগিত করে খালেদা জিয়া বলেন, “সরকার প্রধান যতই উচ্চ স্বরে বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করুন না কেন ইতালি নাগরিক তাভেল্লা হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে জুলহাজ ও তনয় এবং রুস্তম আলী পর্যন্ত প্রতিটি হত্যার দায় এই সরকারকেই নিতে হবে।

“তিনি যতই উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা করুন না কেনো, জাতীয় অর্থনীতির হরিলুট, রাজকোষ চুরির ঘটনা এড়াতে তিনি যতই অপকৌশল করুন না কেন জনগণের দৃষ্টিকে ঝাপসা করতে পারবেন না।”  বিভিন্ন হত্যাকান্ডের ঘটনার পর বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি প্রধান।   রাজশাহীতে শিক্ষক এবং কলাবাগানে বাড়িতে ঢুকে দুজনকে কুপিয়ে হত্যার প্রেক্ষাপটে সোমবার রাতে গণভবনে দলীয় নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ঘটনার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করেন।   এই বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, “যেকোনো হত্যাকাণ্ডের পর নিজেদের স্বার্থে অতি অবিশ্বাস্য কল্পকাহিনী করা আওয়ামী লীগের স্বভাবধর্ম। ভোটারবিহীন সরকারের দোষ চাপানোর এই অপকৌশল মূলত প্রকৃত ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া ও আসল অপরাধীদের আড়াল করা।”