রামপুরায় দোকানের ম্যানেজারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা

1465467017

রাজধানীর রামপুরার হাজীপাড়া এলাকায় দিনদুপুরে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ইসমাইল হোসেনকে (৩৬) গুলি করে হত্যার পর দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুর্বৃত্তরা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার পর অস্ত্র উঁচিয়ে বীরদর্পে চলে গেলেও তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসেননি কেউ। দুই থানার টানাটানিতে পুলিশও ঘটনাস্থলে যায় অনেক পরে।

এই খুনের ঘটনায় প্রকাশ্যে এসেছে স্থানীয় সন্ত্রাসী কাইল্যা পলাশ আর তার চাচাত ভাই রাশেদ আলীর ও ভাগ্নে তুষারের নাম। কারা গুলি করেছে সেটি এলাকাবাসী দেখে থাকলেও আতংকে কেউ বলছে না এই সন্ত্রাসীদের নাম। চাপা ক্ষভ বিরাজ করছে পুরো এলাকায়। স্থানীয় পুলিশের ভূমিকাতেও প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর।

জানা যায় যে, নিহত ইসমাইল হোসেন রামপুরার ডিআইটি রোডে ‘বাংলাদেশ স্যানেটারি’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ছিলেন। হাজীপাড়ায় আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক থেকে দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা তুলে পাশেই আরেকটি ব্যাংককে তা জমা দিতে যাওয়ার সময় তিনি ছিনতাইয়ের শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনরা জানান, ইসমাইল ব্যাংক থেকে নামতেই পলাশ বাহিনীর তুষার ও রাশেদের নেতৃত্বে প্রায় ৫/৬ জনের একটি দল ইসমাইলকে ঘিরে ধরে। তারা অস্ত্র বের করে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় তাদের সঙ্গে ইসমাইলের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে উক্ত গ্রুপের দুই যুবক ইস্মাইলের বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে টাকাগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়।

ঘটনার আনুমানিক আধ ঘণ্টা পর আশপাশের লোকজন গুলিবিদ্ধ ইসমাইলকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেন। খবর পেয়ে তার প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও স্বজনরা সেখানে যান। পরে ইসমাইলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকেল ৩টার দিকে তিনি মারা যান। ফুটপাতের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ঘটনার সময় রাস্তা দিয়ে লোকজন যাচ্ছিল। এর মধ্যেই দুর্বৃত্তরা যেভাবে ওই ব্যক্তিকে ঘিরে হাঁটছিল তাতে করে সবাই ছিনতাইকারী বুঝলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে যায়নি। এক পর্যায়ে অস্ত্রধারীদের একজন গুলি করে। এরপর তিনজন অস্ত্র উঁচিয়ে হাজীপাড়া মহানগর প্রজেক্টের দিকে হেঁটে চলে যায়। অস্ত্র তাক করা থাকায় কেউ আর সামনের দিকে যায়নি। ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, অস্ত্রধারীরা বয়সে তরুণ। ঘটনার অনেকক্ষণ পর পুলিশ আসে। এরপর বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, শুরুতে তারা ভেবেছিলেন ঘটনাটি রামপুরা থানা এলাকায় পড়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে দেখেন, মাত্র কয়েক গজের জন্য ঘটনাস্থলটি তাদের থানা এলাকায় পড়েছে। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। কাইল্যা পলাশ গ্রুপের সম্পৃক্ততা নিয়ে ওসিকে প্রশ্ন করা হলেও, তিনি এই ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজী হননি। তিনি বলেন, “তদন্তকালীন সময়ে এই বিষয়ে আমরা কথা বলব না”

নিহত ইসমাইলের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। নিহতের স্বজনরা জানান, ইসমাইলের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। তার বাবার নাম মোস্তফা কামাল। মগবাজারের মধুবাগ এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন তিনি।