কাশিমপুর থেকে ঢাকা কারাগারে নিজামী

19511.jpegমানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে। তাঁকে আজ রোববার রাতে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

কাশিমপুর কারাগারের জেলার নাশির আহমেদ বলেন, রাত ১০টা ২৫ মিনিটে মতিউর রহমান নিজামীকে ঢাকার উদ্দেশে পাঠানো হয়।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ ফাঁসির সেলের বন্দী মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গত বৃহস্পতিবার খারিজ হয়ে যায়। ওই দিন দুপুরে কারাগারে তার কাছে থাকা একটি এক ব্যান্ডের রেডিওর মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার খবর শুনেছেন। এর পর পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।

মানবতা বিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২-৩ মাস আগে মতিউর রহমান নিজামীকে কাশিমপুরের ওই কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে তিনি কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও চট্টগ্রাম কারাগারেও বন্দী ছিলেন।

বৃহস্পতিবার তার রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পর কাশিমপুর কারা চত্বর ও আশে-পাশের এলাকায় নজরদারি ও সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। তবে ওই কারাগারে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বজায় রয়েছে। কারণ এ কারাগারে জেএমবিসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ধর্ষ আসামি বন্দী রয়েছে।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন নিজামী। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ১৫ মার্চ আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর ২৯ মার্চ নিজামীর আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা দেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজামীর বিরুদ্ধে আনা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে পাবনার বাউসগাড়ি ও ডেমরা গ্রামে ৪৫০ জনকে নির্বিচারে হত্যা ও ধর্ষণ, করমজা গ্রামে ১০ জনকে হত্যা ও তিনজনকে ধর্ষণ, ধুলাউড়ি গ্রামে ৫২ জনকে হত্যা এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনার দায়ে (২,৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ) নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

আপিল বিভাগের রায়ে করমজা গ্রামে ১০ জনকে হত্যা ও তিনজনকে ধর্ষণের দায় (৪ নম্বর অভিযোগ) থেকে নিজামীকে খালাস দেওয়া হয়। বাকি তিন অভিযোগে তাঁর ফাঁসির আদেশ বহাল রাখা হয়।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ২৮ মে ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার শুরু করেন।