৩০ জনের নিশ্চিত প্রাণহানি, তেহরিক ই তালেবানের দায় স্বীকার

2c5add67c4e23d89060de81f743f88a4-

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার চারসাদ্দায় অবস্থিত বাচা খান বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকধারীদের বিরুদ্ধে এখনও অভিযান চলছে কিনা, তা নিয়ে দুই রকম খবর দিচ্ছে পাকিস্তানের দুই সংবাদমাধ্যম। ডনের খবরে বলা হচ্ছে, জঙ্গিবিরোধী অভিযান সমাপ্ত করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। তবে এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়েছে, এখনও বন্দুকযুদ্ধ চলছে, চলছে জঙ্গিবিরোধী অভিযান। এদিকে পাকিস্তানের পুলিশের বরাতে ৩০ জনের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছে নিরাপত্তা সূত্র। খাইবার পাখতুনখোয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গাডিয়ান ৩১ জনের প্রাণহানির আশঙ্কা জানিয়েছেন। তবে মৃতের সংখ্যা অনেক বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন ওই মন্ত্রী। পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলোতেও মৃতের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়ার আশঙ্কা করা হয়েছে। তেহরিক ই তালেবান, পাকিস্তানের তরফে এই ঘটনার দায় স্বীকার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো।

এর আগে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে সেনাবাহিনীর এলিট কমান্ডো। সেনাসূত্র চার হামলাকারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভিন্ন ভিন্ন দাবির বরাতে নিহতের সংখ্যা ২০-৬০ বলে উল্লেখ করেছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। একইসঙ্গে পেশাওয়ার স্কুলের হামলার মতোই এ হামলায় বহু প্রাণহানি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে পেশাওয়ার স্কুলে ওই হামলায় ১৪০ জনের প্রাণহানি হয়েছিল।  ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা নিয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

মানবিক সহায়তাকারী সংগঠন ইদির এক স্বেচ্ছাসেবীর বরাতে ডন জানায়, অন্তত ১৫টি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। উদ্ধার হওয়া এক শিক্ষার্থীর বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে এক উদ্ধারকারী ডনকে জানান, ৬০-৭০ জন শিক্ষার্থীকে মাথায় গুলিবিদ্ধ হতে দেখা গেছে। তবে এখনও এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে ডন জানায়, বুধবার সকালে দেওয়াল টপকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন বন্দুকধারীরা। এদিন বাচা খানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কবিতা আবৃত্তি চলছিল। সেসময় বন্দুকধারীরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি ছুড়তে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে তিন বন্দুকধারীর প্রবেশের কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।  পরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে চার বন্দুকধারী নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সেনা মুখপাত্র।  তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেে আরও ৮-১০ জন বন্দুকধারী অবস্থান করছেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করে গোয়েন্দা সূত্র।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, তিনি একজন নিরাপত্তা রক্ষীকে কোনও একজনের সঙ্গে কথা বলতে দেখেছেন। তিনি শুনেছেন, ওই নিরাপত্তা রক্ষী টেলিফোনে অনেকের নিহত এবং আহত হওয়ার কথা জানাচ্ছেন।

একজন শিক্ষকের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। সঙ্গে নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে আরও দুই শিক্ষার্থীর প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছে ডন। হাসপাতাল থাকা অঞ্চলগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আহতদের ডিস্ট্রিক্ট হেডকোয়ার্টার্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিভির বরাতে ডন জানায়, অন্তত তিন বন্দুকধারী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে গুলি ছুড়তে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৩ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে থাকে। হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে ডনের প্রতিনিধির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এক নারী। তিনি জানান ভেতরে প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছে। দ্রুত সহায়তার আবেদন জানান তিনি।

সূত্র:  ডন, গার্ডিয়ান