গোয়েন্দা থেকে যেভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন

putin-5af185c67f1c4

৬৫  বছর বয়সী ভ্লাদিমির পুতিন চতুর্থবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। চারবারের প্রেসিডেন্ট পুতিনের জীবন খুব সহজ ছিল না। ১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর পুতিনের জন্ম।তার শৈশব কেটেছে কঠিন এক পরিবেশের মধ্য দিয়ে। একসময় লেলিনগ্রাদ নামে পরিচিত আজকের সেন্ট পিটসবার্গে বেড়ে উঠেছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের বাবা কারখানায় কাজ করতেন। আর তার দাদা ছিলেন বাবুর্চি।

পুতিন যেখানে বড় হয়েছেন সেই এলাকায় ছেলেবেলাতেই তার সঙ্গে স্থানীয় ছেলেদের সংঘাত হয়। আত্মরক্ষার তাগিদে তাই পুতিন ছেলেবেলায় জুডো খেলা রপ্ত করেন।

স্কুলে পড়ার সময় তিনি গোয়েন্দা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। ভাবতেন, বড় হয়ে তিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে কাজ করবেন।

বিবিসি বলছে, পুতিন যে একজন লড়াকু মানসিকতার ব্যক্তি এটা বিভিন্ন সময় তার কথাবার্তায় প্রকাশ পেয়েছে।

২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন,’কোন লড়াই যদি অবশ্যম্ভাবী হয়, তাহলে প্রথম আঘাতটা আপনাকেই করতে হবে।’

আর এই শিক্ষা তিনি ৫০ বছর আগে লেলিনগ্রাদের রাস্তা থেকে পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।

আইন শাস্ত্রে পড়াশোনা শেষে নিজের স্বপ্ন পূরণে তিনি গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন। স্নায়ু যুদ্ধের সময় তিনি তৎকালীন পূর্ব জার্মানিতে কেজিবির গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করেন।

১৯৯৭ সালে বরিস ইয়েলেৎসিন যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তখন ভ্লাদিমির পুতিন ক্রেমলিনে আসেন। এই সময় তাকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সার্ভিসের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

১৯৯৯ সালের শুরুতে ইয়েলেৎসিন প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন।

২০০০ সালের মার্চে নির্বাচনের মাধ্যমে পুতিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনায়াসে জয়লাভ করেন। ২০০৪ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

কিন্তু রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী কোন ব্যক্তি পরপর তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ কারণে ২০০৮ সালে পুতিন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচন করেন।

২০১২ সালে তিনি তৃতীয়বারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে স্ত্রীর সঙ্গে পুতিনের ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ঘটে। প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, পুতিন শুধুই কাজের মধ্যে ডুবে থাকেন। কাজই তার নেশা। ব্যক্তিগত জীবনে দুই মেয়ের জনক পুতিন। বড় মেয়ে শিক্ষাবিদ। আর ছোট মেয়ে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রশাসন বিভাগে একটি উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করেন।