পাপুয়া নিউ গিনিতে অস্ট্রেলীয় শরণার্থী শিবির ‘অবৈধ’

অস্ট্রেলিয়া তাদের অফশোর প্রসেসিং পলিসির অধীনে অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের তাদের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে না দিয়ে পাপুয়া নিউ গিনির উত্তরের প্রদেশে অবস্থিত মানুস দ্বীপের আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়।

পাপুয়া নিউ গিনির সুপ্রিম কোর্টের পাঁচজন বিচারপতির বেঞ্চ এ ব্যবস্থাকে ‘অবৈধ’ বলে রায় দিয়েছেন। দেশটির সংবিধানের ৪২তম ধারায় শুধুমাত্র অপরাধী, অবৈধ অভিবাসী ও রোগ-সংক্রমণের আশঙ্কায় কাউকে আটকে রাখা ছাড়া আর সব মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।  কিন্তু ২০১৪ সালে পাপুয়া নিউগিনি সরকার সংবিধানের ৪২তম ধারায় নতুন একটি অনুচ্ছেদ যোগ করে।  সেখানে বলা হয়, “পাপুয়া নিউ গিনি অন্য দেশের সঙ্গে মিলে বিশেষ ব্যবস্থায় বিদেশি নাগরিকদের আটকে রাখতে পারবে।”নতুন এই অনুচ্ছেদটিকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট।  রায়ে বলা হয়, “মানবজাতির অধিকার ও মর্যাদাকে সম্মান দেখানোর প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে ওই অনুচ্ছেদটি খাপ খায় না।”  “যেহেতু অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় পাপুয়া নিউগিনিতে প্রবেশ করেনি তাই তাদের অবৈধ অভিবাসী বলা যাবে না। যে কারণে তাদের মানুস দ্বীপে আটকে রাখা অসাংবিধানিক ও অবৈধ।”  আদালতের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, “অস্ট্রেলিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনি সরকার উভয়কে দ্রুত অভিবাসন প্রত্যাশীদের অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে আটকে রাখা বন্ধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

বর্তমানে মানুস দ্বীপের ডিটেনশন সেন্টারে প্রায় ৮৫০ জন পুরুষকে আটকে রাখা হয়েছে। যাদের মধ্যে অর্ধেককে প্রকৃত শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।  যদিও পাপুয়া নিউ গিনির সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তাদের অভিবাসন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন মন্ত্রী পিটার ডুটন।  এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “যে সব মানুষ অবৈধভাবে নৌকায় করে এসেছে এবং এখন মানুস দ্বীপের আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে তাদের অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডে পুনর্বাসন করা হবে না।”

এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরোধী দল লেবার পার্টি সরকারকে পাপুয়া নিউ গিনির সঙ্গে জরুরি আলোচনা করার আহ্বান জানিয়েছে।  গ্রিন সিনেটর সারাহ হানসন-ইং বলেন, “খেলা শেষ হয়েছে। সরকারকে মানুস দ্বীপের ডিটেনশন সেন্টার বন্ধ করে দিতে হবে এবং ওই সব লোকজনকে মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসতে হবে।”  “এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং আমি একে স্বাগত জানাচ্ছি। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া সরকার বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে শরণার্থীদের মানুস দ্বীপে আটকে রেখেছে।”