এখন বাংলাদেশের সময়: পরিকল্পনামন্ত্রী
বিশ্ব অর্থনীতিতে পরিবর্তনের পরিক্রমায় এখন বাংলাদেশের ‘সময় এসেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
মুস্তফা কামাল বলেন, “পৃথিবীর অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসে। একসময় যারা সমৃদ্ধশালী ছিল আজ তারা নয়।
“দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে। এরপর জার্মানি, জাপান, চীন হয়ে পরিবর্তন চলছে। এখন বাংলাদেশের সময়। বাংলাদেশ এখন যেখানে দাঁড়িয়ে, শত চেষ্টা করেও কেউ বাংলাদেশকে পেছাতে পারবে না।”
বিশ্ব ব্যাংক এবং গ্যালাপের বরাত দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে হবে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে হবে তৃতীয়।
“অর্থাৎ প্রবৃদ্ধিতে আমাদের অবস্থান তিন-এর কম হবে না। কারণ আমাদের সক্ষমতা-দক্ষতা বাড়ছে। দেশের মানুষই প্রতিযোগিতা করছে কীভাবে নিজেকে এগিয়ে নেবে। কোনো শক্তি বাধা দিতে পারবে না। আমরা এগোবোই।”
২০২০ সালে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের উপরে নেওয়ার আশা জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারি, তাহলে ২০৪০ সালে বাংলাদেশ থাকবে উন্নত বিশ্বের কাতারে।
“তখন আমাদের অর্থনীতি হবে পৃথিবীর ২৩তম অর্থনীতি। এমনকি থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়ার উপরে থাকব। সেই সুবর্ণরেখায় পৌঁছাবই।”
বিশ্ব অর্থনীতিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে থাকা চীন ও জাপান এবং উদীয়মান ভারতও বাংলাদেশকে ছাড়া এগিয়ে যেতে পারবে না, বলেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের ৮০ শতাংশ চট্টগ্রাম থেকে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৭০ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হওয়ার তথ্য জানিয়ে বন্দর নগরীর গুরুত্ব তুলে ধরেন মুস্তফা কামাল।
“চট্টগ্রামকে ঘিরেই বাংলাদেশের মানুষ স্বপ্ন দেখে। সব বড় প্রকল্প চট্টগ্রামে দিয়েছি। তিন বছর পর চট্টগ্রাম শহর চিনতে পারবেন না।”
অনুষ্ঠানে কানাডার হাইকমিশনার বিনোয়েত পিয়ারে লারামি বলেন, সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তি করায় বাংলাদেশের সামনে ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নের সুবর্ণ সুযোগ আছে। অবকাঠামো, দক্ষ জনশক্তি ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন হলেই বাংলাদেশ লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ওলেগ তনকনোজেনকভ ভারত-চীন এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থল হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন।
জাইকার সিনিয়র রিপ্রেজেনটেটিভ হিতোশি আরা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণ, সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যেগ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেন।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বন্দর নগরীর র্যাডিসন ব্লু হোটেলের এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মিশরের রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইজ্জত, কলকাতার বেঙ্গল চেম্বারের সভাপতি সুতনু ঘোষ, এফবিসিআইর প্রথম সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও স্টার্ন্ডাড চার্টাড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী আবরার এ আনোয়ার।
অনুষ্ঠানে ‘দ্য বে অব বেঙ্গল গ্রোথ ট্রায়েঙ্গেল অ্যন্ড দ্যা মেরিটাইম সিল্ক রুট’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এ কে খান অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন কাশেম খান।