মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি বহাল
সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। অন্য দুই আসামি হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ও মুফতি মঈন উদ্দিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশও বহাল রাখা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের ওই রায় বহাল রেখেছেন।
প্রায় এক যুগ আগে ২০০৪ সালে সিলেটে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এ মামলায় গত বুধবার আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ওপর যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়। পরে রায় ঘোষণার দিন আজ বৃহস্পতিবার ১১ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ, মোহাম্মদ আলী ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাসনা বেগম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবীর।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এ হামলায় পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন, আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক আহত হন।
ঘটনার দিন সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, তাঁর ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, শরীফ শাহেদুল আলম ও দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ওই বছরের ৩১ জুলাই ওই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে ২০০৮ সালের ১১ মার্চ মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ও দেলোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। অন্য দুই আসামি হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ও মুফতি মঈন উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই পাঁচ আসামি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
নিম্ন আদালতের রায়ের পর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) হাইকোর্টে যায়। এ ছাড়া আসামিরা আলাদা আপিল করেন। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে এ মামলার শুনানি শুরু হয়। তিন দিনে রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক উপস্থাপন শেষ করে। এরপর ছয় দিনে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করে। দুই পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছিল।