খোলা মাঠে ছাত্রীকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের খেতাচিড়া এলাকার বলেশ্বরের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন একটি খোলা মাঠ থেকে ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহিত শিরিন স্থানীয় শাহাদাৎ হোসেন মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ও উপজেলার উত্তর খেতাছিড়া গ্রামের ক্ষুদ্র মাছব্যবসায়ী সফিজউদ্দিনের মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার শিরিন তার বড় বোন কাজলকে নিয়ে একই গ্রামের দুই কিলোমিটার দূরে বড় ভাই আবু হানিফের সদ্য ভূমিষ্ট শিশুকন্যাকে দেখতে ভাইয়ের শ্বশুর জাহাঙ্গীর চাপরাসির বাড়িতে বেড়াতে যায়।
মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে শিরিন সেখান থেকে প্রাইভেট পড়ানোর উদ্দেশে রওয়ানা হন। পথে ঘনকুয়াশার মধ্যে একাকী পেয়ে অজ্ঞাতনামা দুবৃর্ত্তরা প্রথমে তাকে ধর্ষণ করে।
পরে শক্ত মাটির ঢেলা দিয়ে এলোপাতাড়ি মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্মমভাবে আঘাত করে শিরিনকে গুরুত্বর যখম করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
আধাঘণ্টা পর বড় বোন কাজল তার পাঁচ বছরের শিশু পুত্রকে নিয়ে ওই পথ ধরে মাঠের মধ্য দিয়ে তালই বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি আসার সময় বিবস্ত্র অবস্থায় শিরিনকে ছটফট করতে দেখে চিৎকার দেয়।
কাজল তাকে কাপড় চোপড় পরিয়ে কোলে নেয়ার কিছুক্ষণ পর শিরিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় সৈয়দ কাজী (৫০) নামে এক কৃষককে আটক করেছে পুলিশ।
খবর পেয়ে পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ওয়ালিদ হোসেন, মঠবাড়িয়া সার্কেলের এএসপি মোস্তফা কামাল ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত)খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে এঘটনার পর থেকে নিহত শিরিনের মা শান্তি বেগম ও বাবা সফিজউদ্দিন বাকরুদ্ধ হয়েছে পড়েছে।
ওই কলেজ ছাত্রীর আরেক বোন বরগুনা সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রেখা আক্তার নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবী জানান।
এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর শিরিনের সহপাঠী ও কলেজের শিক্ষকদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
কলেজ অধ্যক্ষ আ. রাজ্জাক মোল্লা জানান, ঘটনার খবর শুনে কলেজসহ স্থানীয় তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করেছে। হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে ২/১দিনের মধ্যে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও তিনি জানান।