প্রবাসে বাড়ছে বাংলাদেশী সমকামির সংখ্যা

30073985_1367078800104853_829467760_o

সুমন শাহরিয়ার, বিশেষ প্রতিনিধি

এই ধরনের পোস্টার বাংলাদেশে সচারাচর দেখা যায়না এবং অনেকটা দূর্লভও বটে সুতরাং নিজস্ব কৌতূহলের এক গনগনে আগুনে ঝাঁপ দিতেই হোলো। খোঁজ নিয়ে জানা যায় নারায়নগঞ্জের ছেলে শাহাদাত হোসেন লন্ডনে প্রকাশ্যে তিনি নিজে ও তার সঙ্গী মাসুদ রানাকে সমকামী বলে ঘোষনা দিয়েছে এবং ফেসবুকে তার ব্লগ ও সেই ব্লগে থাকা ছবি শেয়ার করেছে তারই ছেলে বন্ধু মাসুদ রানা নামে আরেকজন। এই ঘটনা নিয়ে তারই নিজস্ব এলাকায় চলছে সমালোচনা, আলোচনা ও বিক্ষোভ। গতকাল শহরের বিভিন্ন গলিতে চলেছে পোস্টারিং ও সমাবেশ। তাঁরা শাহাদাত হোসেনকে এলাকার কুলাঙ্গার সন্তান হিসেবে সূচিত করেছেন।IMG_0595 (1)

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শাহাদাত হোসেন নারায়ঙ্গঞ্জের স্থানীয় ছেলে এবং বর্তমানে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন প্রবাসী। শাহাদাতের বাবার নাম কাওশার আহমেদ এবং তিনি নারায়নগঞ্জের অধিবাসী।

এই ব্যাপারে শাহাদাতের পিতা জনাব আহমেদ এর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি এই ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। তবে এই এলাকার তরুন যুবক সম্প্রদায়ের ব্যাক্তিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, শাহাদাৎ আজ বেশী কিছু বছর ধরেই যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। সেখানে গিয়ে তিনি প্রকাশ্যে সমকামিতে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এবং লন্ডনের নাস্তকদের এক প্যারেডে “আল্লাহ সমকামী প্ল্যাকার্ড” নিয়ে তিনি মিছিলেও যোগ দিয়েছেন।

এই সংবা29856004_1367078716771528_1599336790_nদের পর শাহাদাতের পরিবারে নেমে এসেছে এক শোকের ছায়া। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শাহাদাতের পরিবার অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ একটি পরিবার। ছেলের এহেন কর্মকান্ডে ও এমন ধর্ম অবমাননাকারী অবস্থানে পুরো পরিবার এখন এক অসহনীয় সংকোচনে দিনানুপাত করছে।

শাহাদাতের ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায় আরো চমক প্রদক তথ্য। তাঁর ফেসবুকে গিয়ে দেখা যায় যে তিনি সেখানে একের পর এক ধর্ম অবমাননাকারী কদর্য সব মন্তব্য করে রেখেছেন মুসলমান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে এবং সেখানে ক্রমাগত প্রচার করছেন সমকামিতা।

এদিকে সুজনের সাম্প্রদিক এক প্রতিবেদনে জানা যায় যে বাংলাদেশের বাইরে যত দেশে প্রবাসী বাংলাদেশীরা স্থায়ী বা অস্থায়ী আবাসনের জন্য পাড়ি জমিয়েছিলেন তাদের মধ্যে একটি সিংহ ভাগ অংশ সমকামিতার দিকে ঝুঁকছে। ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে সুজনের এই সমীক্ষা প্রকাশ উপলক্ষ্যে একটি সেমিনার আয়োজন করা হয় যেখানে দেখানো হয় যে বাংলাদেশ থেকে চলে যাবার পরেঈ সাধারণত একজন সমকামি নিজেকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। এই প্রবনতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমরা ঢাকা ইউনিভার্সিটির মনোরোগ বিষয়ে এনালিস্ট প্রফেসর মিসেস শাহানা  আফরোজের কাছে প্রশ্ন করি। তিনি আমাদের বলেন যে “এই প্রবণতার মূল কারন হচ্ছে দেশে সমকামিতার বিরুদ্ধে সাধারণ জনতা ও সরকারীর আইনগত ভাবে বিরুদ্ধ অবস্থান। বাংলাদেশের পেনাল কোডের ৩৭৭ ধারার ফলে যেহেতু সমকামিতা নিষিদ্ধ সেহেতু এই বিষয়ে প্রকাশ্যে বলা কিংবা এই ব্যাপারে সর্ব সম্মুখে কথা বলাটাও আইনের আওতায় পড়তে পারে এমনটা ভেবেও কিন্তু ভয়ের কারন রয়েছে। মূলত সরকারী পক্ষ থেকে বিধি ও সামাজিকভাবে প্রবল চাপের কারনেই নিজেদের দেশে একজন সমকামি নিজেদের সেক্সুয়াল আইডেন্টিটির ব্যাপারে ঘষনা দিতে সন্ধিগ্ধু ও ভীত হয়ে থাকে”

29855832_1367078790104854_49151661_nই সমীক্ষায় উঠে আসে বাংলাদেশী বংশদ্ভুত প্রায় ৬০ হাজার ছেলে মেয়ে সমকামিতার দিকে ঝুঁকেছে। যার পরিমাণ যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকাতেই বেশী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় শুধু লন্ডনেই নয় বরং বাংলাদেশের বাইরে এমন পশ্চিমা দেশ গুলোতে ক্রমাগত বাড়ছে বাংলাদেশী সমকামির সংখ্যা। উল্লেখ্য যে গত ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ইং সোমবার বিকালে রাজধানীর কলাবাগানে খুন হন ইউএসএআইডির কর্মকর্তা ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাবেক প্রটোকল অফিসার জুলহাজ মান্নান (৩৫) ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব তনয় (২৮)। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামের এক ইসলামিক গেরিলা গোপন গোষ্ঠী যারা আলকায়েদার বাংলাদেশ শাখার বলে নিজেদের পরিচয় দিয়ে থাকে, তারা এই হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে। জানা যায় জুলহাজের মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলার তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। যদিও ঘটনার দেড় বছর হতে পেরিয়ে গেলেও কোনও খুনিই আদতে গ্রেফতার হয়নি এখন পর্যন্ত।

নিহত জুলহাজ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির খালাতো ভাই। বাংলাদেশে সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করতেন তিনি। ‘রূপবান’ নামে একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করতেন তিনি। অন্যদিকে তনয় আশা ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা করতেন। লোকনাট্য নামের একটি থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

বাংলাদেশের বাইরে এইভাবে ক্রমাগত সমকামীদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে দেশের সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে কিনা এই ব্যাপারে নারায়নগঞ্জের সঙ্গসদ সদস্য শামীম ওসমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “এই এক দুইটা আল্লাহর গজব প্রাপ্ত ব্যাক্তির জন্য দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবেনা। শাহাদাত হসেন নামের যেই ছেলের কথা আজ30020100_1367078750104858_354669704_n দেখছি তাদের পরিবারকে আমি ব্যাক্তিগতভাবে চিনি। এরা সবাই আইভি আর রাফিউর রাব্বির অনুসারী এবং চরম নাস্তিক। এদেরকে শায়েস্তা কিভাবে করতে হয় তা জনতা জানে। এদের কারনে দেশের ও সরকারের কোন ক্ষতি হবার প্রশ্নই আসেনা”

এটিও উল্লেখ্য যে গত  ১৯ এপ্রিল বুধবার দুপুরে হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সমন্বয়ক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান জানান, গত সাত এপ্রিল শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে রফিউর রাব্বি ইসলাম ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেন।

হেফাজত নেতার দাবি রাফিউর রাব্বি ওই অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘যদি বাংলার মানুষ জানত সংবিধান বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম দিয়ে শুরু হবে, দেশ হবে সাম্প্রদায়িকতার দেশ তবে ৩০ লাখ শহীদের মুক্তিযুদ্ধে কেউ অংগ্রহণ করত না।’

অনেকেই মনে করেন হেফাজতের এইসব উত্থান কিংবা রাফিউর রাব্বির বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে শামীম ওসমানের প্রচ্ছন্ন ইন্ধন রয়েছে।