চট্টগ্রাম কলেজে ফের সংঘাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ

রোববার দুপুরে এই সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত দুজনের গায়ে ছররা গুলি লেগেছে বলে মেডিকেল ফাঁড়ি পুলিশ জানিয়েছে ।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) আব্দুর রহিম বলেন, বেলা দেড়টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও হাতাহাতি চলে।

“পরে পুলিশের ধাওয়ায় এক পক্ষ কলেজের ভেতরে ঢুকে যায় এবং অন্যপক্ষ বাইরে অবস্থান নেয়।”

তিন দশকের বেশি সময় পর ইসলামী ছাত্র শিবিরের আধিপত্য থেকে চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাস নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় ছাত্রলীগের একটি অংশ, যারা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিতি।

শনিবার দুপুরে মহিউদ্দিনের অনুসারীরা উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির ভর্তিচ্ছুদের শুভেচ্ছা জানানোর সময় বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।

এর জের ধরে রোববারও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে বলে কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভর্তি কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিন রোববার দুপুরে আ জ ম নাছির সমর্থক ছাত্রলীগ কর্মীদের একটি দল বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে কলেজে প্রবেশ করে প্রধান ফটকের পাশে ভাংচুর শুরু করে।

এ সময় কলেজের ভেতরে থাকা মহিউদ্দিন সমর্থকরা তাদের ধাওয়া করলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে গুলির শব্দও শোনা যায় বলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থী জানান। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া করে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়।

এরপর মহিউদ্দিনের অনুসারীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে এবং নাছিরের সমর্থকরা ক্যাম্পাসের বাইরে গণি বেকারির মোড়ে অবস্থান নেয়।

সংঘর্ষ চলাকালে মূল ফটকের পাশে গার্ড রুমের কাচ, নোটিশ বোর্ড ও ছাত্র সংসদ কার্যালয়ে ভাংচুর চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা।

এ সময় কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

মহিউদ্দিনন্থি ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বহিরাগতরা মেয়র আ জ ম নাছিরের নামে স্লোগান দিতে দিতে ক্যাম্পাসে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা ও ভাংচুর চালায়।”

এ বিষয়ে নাছিরের পক্ষের ছাত্রলীগ নেতাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে নিঝুম, মনির ও হুমায়ন নামে তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তাদের মধ্যে মনির ও নিঝুমের শরীরে ছররা গুলি ও হুমায়নের মাথায় আঘাত লেগেছে বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন।

সংঘর্ষ চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলায় আহত হন চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরা পার্সন শাহাদাত হোসেন।

চ্যানেল আইয়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান চৌধুরী ফরিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংঘর্ষের ছবি নেওয়ার সময় কয়েকজন শাহাদাতকে আঘাত করে এবং তার ক্যামেরা ভাংচুরের চেষ্টা করে।

এছাড়া খাদেমুল ইসলাম দুর্জয়, কনিক বড়ুয়া, মো. কায়সার, জামালউদ্দিন নামে আরও কয়েকজন সংঘর্ষের সময় আহত হন বলে জানা গেছে।