এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না : অধ্যাপক জাফর ইকবাল
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আপাতদৃষ্টিতে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলেও আসলে দেশের পরিস্থিতি ভালো না।
আমাদের অনেক সহকর্মী একা একা বেরোতে ভয় করেন। কারণ তাঁরা সংস্কৃতিমনা মানুষ, তাঁরা লেখালেখি করেন।
এই দেশের যারা একটু প্রগতিশীল, সংস্কৃতিমনা মানুষ তাঁরা যদি মনে করেন একধরণের বিপদের মাঝে আছেন, থ্রেটের মাঝে আছেন তাহলে তো দেশের অবস্থা স্বাভাবিক বলা যাবে না।
সম্প্রতি তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দেশের একমাত্র মানুষ না। আমার মতো আরো অনেক মানুষ আছে। শুধু আমার নিরাপত্তা না দিয়ে গোটা দেশের মানুষের নিরাপত্তা বিধান করা উচিত। যে কারণে হত্যাগুলো হচ্ছে তা চিহ্নিত করা উচিত। এসব হত্যাকান্ড যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তারাও জামিন পেয়ে যায়। বিচার হয় না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কর্মবিরতি পালন কালে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সকাল ১০টা থেকে কর্মবিরতি শুরু হলেও বেলা ১২টায় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রিয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নিয়ে কালোব্যাজ ধারণ করে অবস্থান কর্মসুচি পালন করেন।
এসময় জাফর ইকবাল আরো বলেন, খুনিদের ধরতে সরকার আন্তরিক নয়। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। তিনি বলেন, আগে তো বিভিন্ন সময়ে ব্লগার, লেখক ইত্যাদি বলে বলে মানুষ খুন করতো। এখন একজন শিক্ষক যিনি কিনা সংস্কৃতিমনা, তিনি নিজেও সংগীত পছন্দ করতেন, সেতার বাজাতেন তাকেও হত্যা করা হল।
অবস্থান কর্মসূচি শেষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহিবুল আলমের সঞ্চালনায় সভাপতি ড. সৈয়দ সামসুল আলম বলেন, প্রতিনিয়ত এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার হরণ করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় মানুষ জ্ঞান আহরণ করতেই ভয় পাবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি জঙ্গীগোষ্ঠীদের উসকে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল সকালে ক্লাস নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে গত বুধবার বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালনের ডাক দেয়।