ক্যামেরনের চাওয়া কতটা পূরণ হলো?
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বহুল আলোচিত খসড়া চুক্তি প্রকাশিত হলো গত মঙ্গলবার। কিন্তু এই চুক্তি থেকে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন কী পেলেন, এখন সেটাই প্রশ্ন।
প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন গত নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি দেন, ২০১৭ সালের মধ্যেই তিনি ইইউতে যুক্তরাজ্যের থাকা না-থাকা নিয়ে গণভোট দেবেন। তার আগে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক পুনর্নির্ধারণে চুক্তি নবায়নের চেষ্টা করবেন। তা সফল হলে তিনি ইইউতে থাকার পক্ষে প্রচারণা চালাবেন। তাঁর দাবির মুখে ইইউ গত মঙ্গলবার একটি চুক্তির খসড়া প্রকাশ করে।
যুক্তরাজ্যের হরেক রকম দাবি থেকে সরে ক্যামেরন শেষ পর্যন্ত চারটি দাবি নিয়ে তুলেছিলেন। প্রথম দাবিটি ছিল, যুক্তরাজ্যে আসা ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের আবাসন ও বেকার ভাতার মতো (ইন ওয়ার্ক বেনিফিট) রাষ্ট্রীয় কল্যাণসুবিধা দেওয়া চার বছর বন্ধ রাখতে যুক্তরাজ্যকে ক্ষমতা দেওয়া। এর বিপরীতে ইইউ বলেছে, ওই ব্যয়ের ওপর অস্বাভাবিক চাপ পড়ছে মনে হলে ইইউ নাগরিকদের কল্যাণসুবিধায় ‘জরুরি বিরতি’ আনা যাবে। কিন্তু এ সুবিধা ইইউভুক্ত সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। আর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থাকবে ইইউর হাতে।
ক্যামেরনের দ্বিতীয় দাবি ছিল, ইইউর আরোপিত আইন গ্রহণ না করার স্বাধীনতা দেওয়া। এর জবাবে ইইউ একটি ‘রেড কার্ড’ প্রথা চালু করবে। এর আওতায় ইইউর ৫৫ শতাংশ সদস্যরাষ্ট্র যদি মনে করে, সংশ্লিষ্ট আইনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের পার্লামেন্টকে ক্ষমতা দেওয়া উচিত, তাহলে বিষয়টি আরও ব্যাপক আলোচনার জন্য ইইউ কাউন্সিলে যাবে। ফলে এখানেও সুস্পষ্ট প্রাপ্তি ক্যামেরনের নেই।
ক্যামেরনের তৃতীয় চাওয়া ছিল, ইউরোকে একমাত্র মুদ্রা হিসেবে মনে না করে, অর্থনৈতিক জোটের বাইরের দেশগুলোর (যারা ইউরো ব্যবহার করে না) মুদ্রাকেও স্বীকৃতি দেওয়া। পাশাপাশি ইইউভুক্ত কোনো দেশ দেউলিয়া হলে তাদের উদ্ধারে (বেইল আউট) অর্থ ঢালা থেকে যুক্তরাজ্যকে মুক্তি দেওয়া। মুদ্রার বিষয়ে ইতিবাচক থাকলেও ইইউ যুক্তরাজ্যকে বেইলআউটের দায় থেকে ছাড় দেয়নি।
ক্যামেরনের সর্বশেষ দাবি ছিল, ইইউর লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধ করা। এ বিষয়ে অবশ্য সবচেয়ে ভালো সাড়া এসেছে।