যার অনুপ্রেরণায় টুইন টাওয়ার হামলার পরিকল্পনা করেন লাদেন
খোদ যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের কাছে থেকেই ২০১১ সালে সন্ত্রাসী হামলার প্রেরণা পেয়েছিলেন আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন। সেখানকার এক বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ হিসেবে যখন সহকারি পাইলট গামিল আল বাতৌতির আত্মঘাতী হামলাকে দায়ী করা হচ্ছিলো, ঠিক সেই সময় সন্ত্রাসী হামলার উৎসাহ পেয়ে যান লাদেন। নিজেদের সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘আল মাসারা’-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নতুন এ দাবি করেছে আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট আরবভিত্তিক সংগঠন আনসার আল শরিয়া। আর আল মাসারার বরাতে খবরটি প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট। এদিকে আনসার আল শরিয়ার দাবিকে অনুসারীদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, পেন্টাগন এবং পেনসিলভানিয়ায় সন্দেহভাজন আল কায়েদার হামলায় প্রাণ হারান ৩ হাজার মানুষ। আনসার আল শরিয়া জানায়, ওই ঘটনার বছর দুয়েক আগে ২১৭ জন আরোহী নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলস থেকে কায়রো যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয় ইজিপ্ট এয়ার ফ্লাইট ৯৯০। যাত্রীদের অর্ধেকই ছিলেন মার্কিন নাগরিক।
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় বলে সে সময় দাবি করেন মিশরীয় তদন্তকারীরা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহনবিষয়ক নিরাপত্তা বোর্ডের তরফে দাবি করা হয়, সহকারি পাইলট গামিল আল বাতৌতি ইচ্ছে করেই বিমানটি বিধ্বস্ত করেছেন। তাদের দাবি, বিমানটি বিধ্বস্ত করার সময় বাতৌতি বার বার বলছিলেন, ‘আল্লাহ ভরসা।’ তবে মার্কিন তদন্তকারীদের সে অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বাতৌতির পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, বাতৌতি ধর্মান্ধ ছিলেন না।
বিমান বিধ্বস্তের কারণ নিয়ে যখন এমন বিতর্ক চলছিলো তখন নাকি আল কায়েদা নেতা লাদেনের মাথায় খেলছিলো ভিন্ন চিন্তা। আল মাসরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ওই সময় লাদেন সহযোগীদের জিজ্ঞেস করছিলেন, ‘আচ্ছা, ও কোনও ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত করলো না কেন?’
আর তখন থেকেই নাইন ইলেভেন হামলার পরিকল্পনার উৎপত্তি বলে দাবি করেছে আনসার আল শরিয়া। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ব্যবহার করে হামলার পরিকল্পনাটি খালিদ শেখ মোহাম্মদের ছিল বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। আনসার আল শরিয়া জানায়, লাদেন আর খালিদ যেসব সহযোগীদের পাসপোর্ট আছে তাদের ডেকে পাঠান। এরপর বিমান চালনার প্রশিক্ষণ নিতে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়।
এদিকে আনসার আল শরিয়ার দাবিকে অনুসারীদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা উল্লেখ করে নাকচ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি, ইয়েমেনে নিজেদের সংগঠনের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে এবং জনগণকে আকৃষ্ট করতে আনসার আল শরিয়া এমন তৎপরতা চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইয়েমেনে সেনা সদস্য আর নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর একের পর এক হামলার দায় স্বীকার করে আসছে সশস্ত্র সংগঠনটি। সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট