ঝাঁজটা রক্তেই মিশে আছে কোহলির
মাঠে বিরাট কোহলির আগ্রাসী আচরণ নিয়ে কত কথা! ব্যাপারটা ঠিক কি বেঠিক, এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কত আলোচনা! কিন্তু কোহলি ব্যাপারটা নিয়ে যে এতটা অকপট, সেটা বোধকরি জানা ছিল না অনেকেরই। ভারতের ‘সেরা’ এই তারকা নিজের মুখেই বলেছেন, আগ্রাসনের ব্যাপারটা পুরোপুরি না হলেও আংশিক ‘জিন-ঘটিত।’ নিজের পরিবার থেকেই এই মনোভাবটা রক্তে পেয়েছেন তিনি।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার একটি ভিডিও ব্লগে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল কোহলির কাছে জানতে চেয়েছিলেন আগ্রাসনের নেপথ্য রহস্য। কোহলির উত্তর শুনে হয়তো ম্যাক্সওয়েল নিজেই অবাক হয়েছেন। মাঠের ক্রিকেটে কোহলি আগ্রাসী হলেও সেই আগ্রাসনের পেছনে ‘অকপট-হৃদয়’টাই অবাক করে থাকতে পারে ম্যাক্সওয়েলকে। কোহলি বলেছেন, ‘আমার বাবা ছিলেন সিংহ রাশির জাতক। নিজের কাজের ব্যাপারে খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। খুব লড়াকু মনোভাবের মানুষ ছিলেন। এই ব্যাপারটাই হয়তো আমার ভেতরে আগ্রাসী আচরণের ব্যাপারটি ঢুকিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি দিল্লির ক্রিকেট সংস্কৃতিও আমার মধ্যে এক ধরনের কঠোরতা এনে দিয়েছে।’
নিজের পরিবারের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া আগ্রাসী মেজাজের ব্যাপারটি না হয় বোঝা গেল। কিন্তু দিল্লির ক্রিকেট সংস্কৃতি তাঁকে কীভাবে কঠোর করে তুলল? ম্যাক্সওয়েল ভিডিও আলাপনে জানতে চেয়েছিলেন ব্যাপারটি। কোহলি জানিয়েছেন, রাজধানী শহরে ক্রিকেটে জায়গা করে নিতে লড়াই করতে হয় অনেক, ‘দিল্লির ক্রিকেট সংস্কৃতিতে উঠে আসতে হলে অনেক লড়াই করতে হয়। মানসিকভাবে অনেক শক্ত হতে হয়। প্রস্তুত থাকতে হয়, যেকোনো কিছুর জন্যই। সে জন্য দিল্লির ক্রিকেটাররা সাধারণত অনেক আগ্রাসী হয়।’
শচীন টেন্ডুলকারকে দেখেই বড় হয়েছেন। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করেন ক্যারিয়ারের শুরুতে এই টেন্ডুলকারকেই সতীর্থ ক্রিকেটার হিসেবে পাওয়ায়। কোহলির অসম্ভব কৃতজ্ঞ ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা এই ব্যাটসম্যানটির প্রতি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলোতে এই টেন্ডুলকারই যে হাতে-কলমে তাঁর ভুলগুলো শুধরে দিয়েছেন। পরিপূর্ণ এক ক্রিকেটার হয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন, ‘এটা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না যে টেন্ডুলকারের মতো বিশাল মাপের একজন ব্যক্তিত্ব কী সহজ-সরলভাবে সবার সঙ্গে মিশতে পারেন। তিনি শুরুর দিকে যেভাবে আমার ভুল-ত্রুটিগুলো শুধরে আমাকে একজন পরিপূর্ণ ক্রিকেটারে পরিণত করেছেন, তা এক কথায় অনবদ্য।’
সারা জীবন সেরাদের ‘সেরা’ হতে চেয়েছেন। ভিডিও আলাপনে সেটাও উল্লেখ করেছেন তিনি, ‘আমি কখনো দলের অন্য ক্রিকেটারদের মতো হতে চাইনি। আমি সব সময়ই প্রতিপক্ষের মনোযোগের কেন্দ্রে থাকতে চেয়েছি। এমন ক্রিকেটার হতে চেয়েছি, যাতে প্রতিপক্ষ আমাকে নিয়ে আলাদা করে ভাবে। ইনিংসের প্রথম বলেই আমাকে সাজঘরমুখী করতে হন্যে হয়ে চেষ্টা করে।’
সূত্র: এনডিটিভি অনলাইন।