পাকিস্তানকে নাক না গলানোর আহ্বান
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিযেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অপব্যাখ্যা দেওয়ার বিষয়েও সর্তক করা হয়েছে।
রোববার (০৮ মে) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়ামের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গত ০৫ মে (বৃহস্পতিবার) খারিজ করে তার রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ ঘটনায় গত ০৬ মে (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়েই রোববার সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, ‘একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মতো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া আমাদের হতাশ করেছে। আমরা কখনই আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও উদ্বেগকে স্বাগত জানাই না। বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার পরও এটি করছে দেশটি।’
‘তারা বলছেন যে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির রায় বহাল রাখায় ব্যথিত হয়েছেন। কিন্তু আমরা যাদের বিচার করছি, তারা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা কখনই এ ধরনের আচরণ প্রত্যাশা করি না।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘একাত্তরে মানবতাবিরোধীরা পাকিস্তানের হয়ে কাজ করেছেন। সেজন্যই সেই অপরাধীদের জন্য পাকিস্তান ব্যথিত হয়েছে।’
পাকিস্তানের এহেন আচরণে আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ইসলামাবাদের এ ধরনের আচরণকে বিপজ্জনক মনে করি, কারণ মানবতাবিরোধীরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আশ্বস্ত করার একটি জায়গা খুঁজছেন। আর পাকিস্তানও রাষ্ট্র হিসেবে তাদের পাশে থাকবে-এ ধরনের একটি বার্তা হয়তো দিতে চাইছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে এবং ’৭৪-এর চুক্তির অপব্যাখ্যা দেওয়া বন্ধ করতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ১৯৭৪ সালে যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির কথা বলা হচ্ছে, সেখানে উল্লেখ ছিলো পাকিস্তানের যে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী আছে, তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিলো, তাদের বিচার করা হবে না।
‘ওই চুক্তিতে কিন্তু বলা হয়নি যেসব যুদ্ধাপরাধী বাংলাদেশের নাগরিক, তাদের বিচার করা যাবে না।’
শুক্রবার নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় বহাল রাখায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দণ্ডের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া অনুসরণ করছি।’
একই সঙ্গে ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চলমান বিচারকে ‘বিতর্কিত’ বলেও আখ্যা দিচ্ছে বাংলাদেশে গণহত্যা চালানোয় দায়ী দেশ পাকিস্তান।