এ কেমন নিষ্ঠুরতা?
দাবি করা যৌতুকের টাকা না এনে দেওয়ায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলা এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পর তাঁর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম সেলিনা বেগম (২৫)। তিনি বরিশালের মুলাদী উপজেলার রামারপোল গ্রামের মৃত সেকেন্দার হাওলাদারের মেয়ে এবং গৌরনদী উপজেলার বোরাদী গরঙ্গল গ্রামের আনোয়ার খানের (৩০) স্ত্রী।
নলচিড়া ইউপি সদস্য সহিদ খান বলেন, খবর পেয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় গত মঙ্গলবার রাতে তিনি সেলিনাকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মীর মহিউদ্দিন বলেন, সেলিনার প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন। ফলে গতকাল তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর অভিযোগ, স্থানীয় লোকজন ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ার খানের সঙ্গে সেলিনা বেগমের দেড় বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে আনোয়ারকে আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় তিন লাখ টাকার মালামাল দেওয়া হয়। কিন্তু বছর না পেরোতেই বিদেশে যাওয়ার জন্য বাবার বাড়ি থেকে ৭০ হাজার টাকা আনতে সেলিনাকে চাপ দেন আনোয়ার। সেই টাকাও এনে দেন তিনি। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার পর গত নভেম্বর মাসে সেলিনার শ্বশুর দুলাল খান আরও ৫০ হাজার টাকা আনতে চাপ দেন। রাজি না হওয়া সেলিনাকে বেদম পেটানো হয়। বিষয়টি ফোনে জানালে আনোয়ার গত জানুয়ারি মাসে দেশে ফেরেন। কিন্তু তিনি উল্টো সেলিনার ওপরই চড়াও হন।
সেলিনা অভিযোগ করেন, তিনি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আনোয়ার তাঁকে হুমকি দেন, ৫০ হাজার টাকা আনলে তিনি গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেবেন। রাজি না হওয়ায় স্বামী-শ্বশুর মিলে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে লাঠিপেটা করেন। সেলিনার বড় বোন লিলি বেগম (৩০) অভিযোগ করেন, সর্বশেষ ১৭ মে স্বামী-শ্বশুর মিলে সেলিনাকে বেদম মারধর করেন। এতে সেলিনার গর্ভপাত ঘটে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাঁকে সাত দিন ঘরে আটকে রাখা হয়।