সৌর প্লেইনের প্রশান্ত পাড়ি
বিবিসি জানায়, প্লেইনটি হাওয়াই দীপপুঞ্জ থেকে যাত্রা করে সিলিকন ভ্যালির মাউন্টেন ভিউ মোফেট এয়ারফিল্ডে অবতরণ করে। তবে আবহাওয়াজনিত জটিলতায় অবতরণে কিছুটা দেরি হয়।
প্লেইনটিতে পাইলট হিসেবে ছিলেন বারট্রান্ড পিকার্ড এবং আন্দ্রেই বর্সবার্গ। প্লেইনটি অবতরণের আগমুহূর্তে পিকার্ড ঘোষণা দেন, “প্রশান্ত মহাসাগর সমাপ্ত।” জরুরি অবতরণের জন্য জায়গার অভাব থাকায় সোলার ইমপালস-এর পৃথিবীব্যাপী ফ্লাইটের এই অংশটি সবচেয়ে বিপজ্জনক ছিলো। গুগল প্রধান সার্গেই ব্রিন বিমানবন্দরে সশরীরে উপস্থিত থেকে তাঁদের স্বাগত জানান।
প্লেইনটির মিডিয়া টিমের এক টুইট বার্তায় প্রকাশিত ভিডিও ক্লিপে তিনি বলেন, “অসাধারণ একটি অবতরণ ছিলো এটি। আমরা ওখানেই দাঁড়িয়ে দেখছিলাম।” অবতরণের পর সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাতকারে পিকার্ড এ “অসাধারণ” অভিজ্ঞতায় আত্মবিশ্বাস ও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। আজ থেকে ৫০ বছর পর বিদ্যুৎচালিত প্লেইন “পঞ্চাশেরও বেশি যাত্রী পরিবহন করবে” বলে ধারণা করেন তিনি। গত বছরের মার্চে এ দুই পাইলট নিয়ে আবু ধাবি থেকে যাত্রা শুরুর পর সোলার ইমপালস ওমান, ভারত, মিয়ানমার ও চীন হয়ে জাপানে পৌঁছে।
এরপর পাঁচ দিন পাঁচ রাতের যাত্রায় ৮,৯২৪ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে হাওয়াইয়ে পৌঁছে। এতে নিরবিচ্ছিন্ন আকাশযাত্রার ক্ষেত্রে নতুন একটি রেকর্ড স্থাপিত হয়। পিকার্ড জানান, “আমরা জানতে পেরেছি যে চিরকাল ধরে উড়তে সক্ষম প্লেইন আমরা তৈরি করতে পারি।”
পিকার্ড এবং বর্সবার্গ সোলার ইমপালস প্রকল্প নিয়ে দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। এই দুই সুইস পাইলটের লক্ষ্য আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে জুনের শুরুতেই নিউ ইয়র্কে পৌঁছানো। এতে প্লেইনের নিয়ন্ত্রণে থাকবেন বর্সবার্গ। এরপর আবার আবু ধাবির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে এ আকাশযাত্রার সমাপ্তি টানবেন তারা। আকারে ৭৪৭ জামবো জেট-এর চেয়ে চওড়া এবং ২.৩ টন ওজনের এ প্লেইনটির ছাদে ১৭ হাজার ফটোভোল্টাইক কোষ রয়েছে, যার সাহায্যে এটি সৌরশক্তি সংগ্রহ করে। এই শক্তি ব্যবহার করে দিনের বেলা প্লেইনটির প্রপেলার কাজ করে এবং রাতে প্লেইনটির মোটর চার্জ করা হয়। এর সীমাবদ্ধতাগুলোর মধ্যে রয়েছে কম গতি, পাইলটের জন্য খুবই কম বিশ্রামের সময় এবং পাবলিক টেলিফোন বুথের চেয়েও ছোট আকারের ককপিট।